কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহের জন্য গত ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর দুইদিনব্যাপী নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। অনলাইন মাধ্যমে যৌথভাবে পরিচালিত এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর মাইগ্রেশন পলিসি ডেভেলপমেন্ট (আইসিএমপিডি)। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)-র মহাপরিচালক শামসুল আলম এই প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন।
জার্মানির ফেডারেল ফরেন অফিসের অর্থায়নে আয়োজিত এই প্রশিক্ষণের মূল উদ্দেশ্য হলো, যেসব জেলায় জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস (ডেমো) নেই, এমন ১০টি জেলা নীলফামারি, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নারায়ণগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, সুনামগঞ্জ, লক্ষীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মেহেরপুর জেলায় অবস্থিত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসমূহ (টিটিসি) এবং বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ মেরিন টেকনোলজি (বিআইএমটি), নারায়ণগঞ্জের অধ্যক্ষ, প্রশিক্ষক এবং শিক্ষকেরা এই প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন। এই প্রশিক্ষণের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো, এইসব টিটিসিকে অন্তবর্তীকালীণ জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দক্ষ করে তোলা যা প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অনুরোধক্রমে আইসিএমপিডি বাস্তবায়ন করছে।
এছাড়াও, এই প্রশিক্ষণে নিরাপদ, নিয়মিত এবং সুশৃঙ্খল অভিবাসন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ক্ষমতা জোরদার এবং ভূমিকা আলোচনা করা হয় । যেহেতু, এই কেন্দ্রসমূহ অভিবাসনের বিষয়ে নানা ধরণের প্রশিক্ষণ প্রদানে দীর্ঘদিন ধরে সাফল্যের সাথে কাজ করে চলেছে, তাই এই কেন্দ্রসমূহকে সংযুক্ত করে অভিবাসন বিষয়ে সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগ ও কর্মসূচীতে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সমূহকে অন্তর্ভুক্ত করা, বিশেষ করে অভিবাসন বিষয়ক গৃহীত কর্মসূচী ও মানবিক পদক্ষেপসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সমূহের সহায়ক অংশগ্রহণের লক্ষ্যে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়, যা নিরাপদ, নিয়মিত এবং সুশৃঙ্খল অভিবাসনের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী পর্বে মহাপরিচালক শামসুল আলম এই ধরণের আয়োজনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। সেই সাথে সময়োপযোগী এ আয়োজনের জন্য আইসিএমপিডি বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অভিবাসী কর্মীদের কল্যাণের জন্য গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। সেই সাথে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সমূহকে অনুরোধ করেন, যথাযথ তথ্য প্রদান করার জন্য। তিনি আশা করেন, সবাই অভিবাসী ও তাঁদের পরিবারের কল্যাণার্থে নানামুখী অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ প্রদান করে বিএমইটি-র কাজে আরও গতিশীলতা আনতে সহায়তা করবেন।
এই প্রশিক্ষণ শেষে উক্ত জেলাসমূহে নিরাপদ অভিবাসন নিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার উদ্যোগ নিয়েছে আইসিএমপিডি। এছাড়াও এই ১০টি টিটিসি-র জন্য ল্যাপটপ কম্পিউটার, আঙ্গুলের ছাপ নেবার যন্ত্র ও সফটওয়্যার, ওয়েব ক্যামেরা প্রদানের ব্যবস্থা করবে আইসিএমপিডি।
আইসিএমপিডি বাংলাদেশের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর ইকরাম হোসেনের সঞ্চালনায় আইসিএমপিডি-র প্রজেক্ট ম্যানেজার গোল্ডা মিরা রোমা ভিয়েনা, অস্ট্রিয়া থেকে অভিবাসনের বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও মৌলিক বিষয়সমূহ নিয়েও আলোচনা করেন। এছাড়াও, অভিবাসনের বিভিন্ন ধাপ, অভিবাসীর ধরণ, আঞ্চলিক আইন ও কাঠামো নিয়েও তিনি বিশদভাবে আলোচনা করেন। এই প্রশিক্ষণটি আয়োজনে অভিবাসী তথ্য কেন্দ্র বাংলাদেশ-এর কাউন্সেলর ফাহিম ফেরদৌস, প্রজেক্ট অফিসার মাকসুদুর রহমান এবং জানালা বাংলাদেশের দল সার্বিকভাবে সহায়তা করছেন